সুজিত মন্ডল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
গতকাল ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার শেষ ও তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচের মাধ্যমে এই ক্রিকেট অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে। প্রথম দফায় ইংল্যান্ডের সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়া এই তিনটি দলের খেলার সূচি নির্ধারণ করা হয়।
গতকাল এক রোমাঞ্চকর ক্রিকেট ম্যাচের স্বাক্ষী হয়েছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। প্রায় পরাজয়ের কিনারা থেকে উঠে এসে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া । সেই সাথে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়লাভ করলো তারা। গতকালকের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া দলের দুই ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ডাবল সেঞ্চুরির উপর ভর করেই জয়ের পথ সুগম হয় তাদের।
ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ড স্টেডিয়ামে গতকাল ৩য় এবং শেষ ওয়ানডেতে টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ইন মরগান।
ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। ইনিংসের প্রথম ওভারের প্রথম দুই বলেই জেসন রয় এবং জো রুটকে আউট করে সাজঘরে ফেরান মিচেল স্টার্ক। রানের খাতা খোলার আগেই দুই উইকেট হারিয়ে বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়ে ইংল্যান্ড।
তবে উইকেটের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে দলের হাল ধরে রাখেন জনি বেয়ারস্টো। ব্যক্তিগত দারুণ এক সেঞ্চুরির মাধ্যমে ইংল্যান্ডকে একটি উল্লেখযোগ্য সংগ্রহের দিকে এগিয়ে দেন তিনি।
দলীয় ২২০ রানের সময় ১১২ রান করে প্যাট কামিন্সের বলে আউট হয়ে যান বেয়ারস্টো। তিনি আউট হয়ে যাওয়ার পর স্যাম বিলিংস এবং ক্রিস ওকস এর দুই অর্ধশতকের সুবাদে ইংল্যান্ড দল ৩০২ রানের একটি দারুণ সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়।
অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে অ্যাডাম জাম্পা এবং মিচেল স্টার্ক, প্রত্যেকেই ৩ টি করে উইকেট শিকার করেন।
ইংল্যান্ডের দেওয়া ৩০২ রানের জবাবে খেলতে নেমে প্রথম থেকেই অস্ট্রেলিয়ার একের পর এক ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরছিলেন। দলীয় মাত্র ৭৩ রানের মাথায় প্রথম সারির মূল্যবান ৫ জন ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যান। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ জয়ের স্বপ্ন তখন হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছিলো।
ঠিক তখনই অ্যালেক্স ক্যারি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল জুটির গড়া ২১২ রান অস্ট্রেলিয়াকে আবারও সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখায়। অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন ক্যারি এবং ম্যাক্সওয়েল।
৯০ বল খেলে ৭ টি ছক্কা এবং ৪ টি চারের মাধ্যমে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল সংগ্রহ করেন ১০৮ রান। অন্যদিকে ১১৪ বল খেলে ২ টি ছক্কা এবং ৭ টি চারের মাধ্যমে ১০৬ রান করেন অ্যালেক্স ক্যারি।
দলীয় ২৮৫ রানের সময় ম্যাক্সওয়েল এবং ২৯৩ রানের সময় ক্যারি আউট হয়ে যাওয়ায় ম্যাচে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
ইনিংসের শেষ ওভারে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়া দরকার ছিলো ১০ রান। তখন ব্যাটিংয়ে ছিলেন মিচেল স্টার্ক এবং প্যাট কামিন্স। শেষ ওভারে লেগস্পিনার আদিল রশিদ বল করতে আসেন। আদিল রশিদের ১ম বলটিকে দুর্দান্ত শটের মাধ্যমে ছক্কায় পরিণত করেন স্টার্ক। অস্ট্রেলিয়ার জয়টা তখন কেবল মাত্র সময়ের মাত্র।
তারপর ওভারের চতুর্থ বলে একটি চারের বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইংল্যান্ডের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন স্টার্ক। সেই সাথে দুই বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেটের জয়ের মাধ্যমে ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি নিজেদের করে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করে দলের জয়ে অবদান রাখায় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের স্বীকৃতি লাভ করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এছাড়া ওয়ানডে সিরিজের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারও তিনি অর্জন করেছেন।