| ২৫ আগস্ট ২০২০
চলে যাওয়া মানুষের মতো।
সময়ের আগেই চলে যাওয়া মানুষের জন্য,
থাকে দুঃখ,
বেদনা,
না পাওয়ার কিছু যন্ত্রনা,
সে যন্ত্রনা ভালোবাসার হতে পারে,
সে দুঃখ কাছে না পাওয়ার হতে পারে।
এই সব পাওয়া – না পাওয়া
দুঃখ বেদনা আর যন্ত্রনাগুলো,
চলে যাওয়া মানুষের জন্যে,
কখনো না কখনো মনের
কোণে কান্নার মেঘ জমায়,
কখনো কখনো সেই মেঘ
চোখের ধারায় প্লাবন ছুটায়।
অকালেই ঝরে যাওয়া মানুষের মিছিলে
আজকাল নিজেকে বড়ো দেখতে ইচ্ছে করে,
ইচ্ছে করে নিজের এই সফল – অসফল
জীবনের সব হিসেবের খাতা বন্ধ করে,
ব্যালেন্স সীটের না মিলা অংক গুলো
না মিলিয়েই চলে যেতে।
মানুষের ব্যাকূল ভালোবাসা
থাকতে থাকতেই চলে যাওয়া,
মানুষকে বহুদিন ধরে
রাখে স্মৃতির মনি কোঠায়।
বেঁচে থাকা মানূষের অনেক ভুল,
বেঁচে থাকা মানুষের অনেক চাওয়া-পাওয়া,
বেঁচে থাকা মানুষের পেয়ে হারানোর ব্যথা
প্রতিদিন হিসেবের খাতা গুলোকে ভারী করে,
ভারী করে তুলে প্রতিনিয়ত।
সেই ভার নিতে নিতে ক্লান্ত
শ্রান্ত পথিক এক, যে প্রতিদিন শুধু
নিজের চলে যাওয়ার ক্ষন গুনে।
তুমি আকাশ ছাড়িয়ে এক আকাশ।
আমি আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখি,
স্বপ্ন দেখি পাহাড় ডিংগিয়ে,
আকাশটাকে নামিয়ে আনি
আমার কাছাকাছি, হাতের মুঠোয়,
আমার এই আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন,
তোমাকেও ছুঁতে চায় ভীষন এক অহমিকায়।
আমি আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নে বিভোর
এক বদ্ধ পাগল,
তোমাকেও ভেবে নেই আকাশ,
কিম্বা কোন এক নক্ষত্র রাশি,
তোমাকেও ভেবে নেই যেকোন
এক পাওয়া না পাওয়া
জ্যোৎস্না বিলানো চাঁদ, অথবা
শরতের মেঘ ভাসা নীলাম্বরী আকাশ।
জ্যোৎস্না বিলাতে বিলাতে যে
চাঁদ সংগ দেয় আমাকে,
যে মেঘ উড়ে চলে আমার পথ ধরে
দিক দিগন্তের সীমানা ছাড়িয়ে।
তুমি যে সেই চাঁদ, সেই মেঘ,
সেই নীল আকাশ ছাড়িয়ে আরো দূর
কোন গ্রহ বা গ্রহপঞ্জির অজানা আকাশ,
তুমি যে আমার কাছে এক
শুধুই দিবাস্বপ্ন,
ভুলে যাই, ভুলে যাই,
বার বার ভুলে যেয়ে আবার
তোমাতেই বাড়াই হাত,
তোমাতেই দেই ভালোবাসার নৈবদ্য।।
এসেছিলে তবু আসো নাই।
বছর ঘুরে তুমি ঠিকই এলে,
এলে কাগজে কলমে,
পত্রিকার পাতায়,
এলে বর্ষপঞ্জীর পাতায়,
মানুষের স্মৃতিতে,
ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জারের পোষ্টে,
কদম ফুলের ছবিসহ শুভেচ্ছায়,
সবখানে তুমি এলে, অথচ তুমি নেই।
তুমি যেমন করে আসো এই ধরায়,
তুমল বর্ষণে, আকাশ কালো মেঘে,
তুমুল ঘনঘটা, বিজলী চমক আর
গুরুগুরু গর্জনে, তুমি আসো চরাচর
ভাসিয়ে, গাছের পাতায়, টিনের চালে,
নৃত্যের তালে তালে ঝমঝমিয়ে,
রক্তের মাঝে গানের সুর বাজিয়ে,
সেই আসাটাই তোমার এখনো নেই।
জ্যেষ্ঠের প্রখরতার পরে বর্ষার মায়াবী
গাহন, যতদুর চোখ যাওয়া দৃষ্টির সীমানা,
ঝিরঝির, টিপটিপ অথবা অবিরাম ঝরে
যাওয়া বৃষ্টির সেই আষাঢ়,
সেই সোঁদামাটির
গন্ধে ভরা আমার সোনালী বাংলা,
কোথাও তোমাকে আজ পাই না।
কবিগুরুর-
বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল,
আজ শুধুই গানের সুরে সুরে,
হৃদয়ের তন্ত্রীতে বাজে, বাস্তবে আসে না।
তারপরেও তুমি এলে,
বর্ষপঞ্জীর হিসাব মেলাতে,
ঋতূচক্রের রথে চরে তুমি এলে,
এসেছিলে তবু আসো
নাই, জানায়ে গেলের মতো।
হৃদয়ের মাঝখানে স্মৃতিগুলো খাবি খায়, চাতকের মতো চেয়ে থাকে,
কখনো হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টির মাঝে,
খুঁজে ফিরি পুরানো আষাঢ়,
রিমঝিম বৃষ্টির মাদকতা, তোমাকে বড়ো টানে,
তোমাকে বড়ো দেখতে মন চায় ,
তুমি আসো, বিশ্ব চরাচর ভাসিয়ে দিয়ে,
তুমি আসো ভরা বরষার একটানা বাদল হয়ে,
তুমি আসো এই বাংলায় চিরায়ত বরষা হয়ে।
প্রিয় ঝাপসা আয়না আমার।
আজকাল ঝাপসা আয়নাতেই মুখ দেখি,
দেখতে বড়ো ভালবাসি,
কোন বলিরেখা নেই,
কোন বার্ধক্য নেই,
নেই কোন মলিনতা অথবা
হেরে যাওয়ার কালো মুখাবয়ব,
নিশ্চিতে,
কাটিয়ে দেওয়া যাবে আরো কিছুকাল,
কাটিয়ে দেওয়া যাবে মিথ্যে আবেশে।
তোমাকেও এড়িয়ে যাবো আজকাল,
এড়িয়ে যাবো তোমার সত্যান্বেষী দু চোখ,
যেখানে প্রতিদিন ধরা পরে আমার ফুরিয়ে যাওয়া, যেখানে নিত্য খেলা করে আমার বুড়িয়ে যাওয়া,
যেখানে শুধুই আমার অপাংতেয়তা।
আমার বেলজিয়ামের স্বচ্ছ আয়নাতেও বড় ভয়, বড়ো সংকোচ, সেখানে ভাসে প্রতিনিয়ত আমার হেরে যাওয়ার গল্প, সেখানে ভেসে উঠে আমার প্রতিদিনের ক্ষয়ে যাওয়া বয়স।
আমার মনের সবুজতাকে ব্যংগ করে বার বার
সেই স্বচ্ছ আয়না বলে দেয়,
থেমে যেতে,
থেমে যেতে,
থেমে যেতে,
বার বার বলে যায়,
থামিয়ে দিতে এই পরাজিত জীবনের রথ।
কাজী রাশেদ
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |