| ২৮ আগস্ট ২০২০
জানালার পাশে মেহেদি গাছ
১.
সকাল বেলা উত্তাপময় চিকচিক রোদ্দুর আশপাশ,
বাঁশের মাচায় লাউয়ের ডগা থাকে না বারো মাস।
জানালার পাশে মেহেদি গাছে পাখির কিচির মিছির,
আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরে কান্নার মাঝে অনেক পাখি হারিয়েছে নীড়।
কামিনী গাছ হতে ফুল ঝরে পড়ে সারাটা বেলা,
তোমাকে বিদায় জানাতে সৃষ্টি কর্তার এ কোন খেলা।
যে মাটিতে একদিন দাঁড়িয়েছিলে সেটি হয়ে গেল ঘরের ছাদ,
ভালবাসার মানুষগুলোকে ছেড়ে কাঁটাবে কত যে রাত।
হৃদয় হতে ভালবাসা জানাতে তোমার আর নেই কোন ব্যস্ততা,
সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে এটাই জীবনের বাস্তবতা।
ঘরের কোনে কোনে আর নেই আনন্দ কোলাহল,
চোখে পড়ে না গ্রামের মানুষের অবাধ চলাচল।
গ্রামের অসহায় মহিলাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তোমার অস্থিরতা,
চারিদিকে শুধুই হাহাকার, বাকরুদ্ধ নীরবতা।
তুমি মহিয়সী, তুমি জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধার সহধর্মিনী,
তোমার কাছে এ বাংলার মানুষ চিরঋণী।
তোমার সহজ সহজ কথা, তোমার সরলতা,
ভুলে যাওয়া কঠিণ তাই বেড়ে দেয় কষ্টের তীব্রতা।
বাড়ির চারিদিকে নারকেল গাছ, সুপারী গাছগুলো যেন তোমার ছায়া,
দু’চোখ ভরা জল, মন থেকে জন্মেছে মায়া।
বাড়ির ধূসর মাটি আর প্রতিটি ধুলিকণায় রয়েছে তোমার স্পর্শ,
দুঃখের চাদরে মোড়ানো এবারের এই বর্ষ।
২.
তোমার প্রিয় মানুষটি একদিন রংপুরের মাটিতে সর্বপ্রথম তুলেছিলেন
মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা,
পদ্মা, মেঘনা, যমুনার বাংলাদেশে তোমার প্রিয় মানুষটি নেই
আজ তুমিও চলে গেলে জীবনটা আঁকা বাঁকা।
তোমারা রয়েছো কাদা মাখা মাঠে
আর বিস্তৃর্ণ সবুজ ধানক্ষেতে,
সোনালী ফসল নদীতে নৌকা
আর মায়ের আঁচল পেতে।
তোমার প্রিয় মানুষটি দেশের জন্য
বহুদিন ছিল জেলে,
কত দিন ও রাত তুমি ঘুমাওনি
চোখ দুটো রেখেছিলে মেলে।