| ০৫ আগস্ট ২০২০
দুরন্ত প্রকৃতি
————-
কাল নাগিনী ফুসছে, ধেয়ে আসছে-
তার সহস্র ফনা বিষে বিষে নীল
যাকে দংশাবে সে নীলকণ্ঠ হয়ে
ছটফট করবে মৃত্যু যন্ত্রনায়।
সাগরের অশান্ত ঢেউ,
উত্তাল জোয়ার আছড়ে পরছে
নৌকার হাল ছেড়ে মাঝি বসে আছে
হয়তো যে কোন সময় ডুবে যাবে তার তরীটি।
আকাশে মেঘের ঘনঘটা
বিদ্যুতের চমকে বজ্রপাতে পৃথিবী কম্পিত
ঝড় আসবে প্রচন্ড বেগে তছনছ করে দেবে
এই ধরনীর সবকিছু।
ভূমিকম্প ধেয়ে আসছে-
চারিদিক লন্ডভন্ড করে দেবে
ধ্বংস স্তুপে পরিনত হবে এই সাজানো
গোছানো জগৎ।
হায়রে পৃথিবী, প্রকৃতির রোষানলে
মানুষ কত অসহায় , নিরুপায় ,
বিরান ভূমি হয়ে যায় জগৎ সংসার
মানুষ হয় স্বজন হীন।
কিন্তু, তারপর একসময় হেসে উঠে প্রকৃতি
কালনাগিনী নিস্তেজ হয়ে যায়
খুজে নেয় তার প্রিয়তা কে।
উত্তাল সাগর শান্ত হয়
বুকে জেগে উঠে চর সবুজের পরশে ছেয়ে যায়।
পাল তোলা নৌকা চলে ভাটিয়ালি গানে
আকাশের এককোনে চাঁদ উকি দেয়
আলোকিত জোছনায় খেলা করে চাঁদ তারা
ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তুপ এর মাঝে
জেগে ওঠে নতুন জীবন
পৃথিবী সেজে ওঠে আবার নব সাজে।
এভাবেই তো যাওয়া আবার ফিরে আসা
আবার নতুন করে গড়া
স্বপ্নের জাল বোনা,
বিপন্ন জীবন কে ভালোবাসা
মনে র আনন্দ নিয়ে জেগে ওঠা
জন্ম থেকে মরন আবার জন্ম এভাবেই আসা
বারে বারে ফিরে আসা।
হে প্রকৃতি রুষ্ট কেন আজ
কেন এ নিষ্ঠুরতা
ফিরিয়ে দাও সেই দেশ
যেথায় পাখি ডাকে
ফুল ফোটে সুবাস ছড়িয়ে
গাছের আড়ালে সুর্য হাসে
সকালের রোদ ঝলমলে করে।
ফিরিয়ে দাও সেই সবুজ মাঠ
যেথায় ধানের শিষ ঢেউ খেলে
যায় লিলুয়া বাতাসে
পাল তুলে নৌকা চলে ঢেউয়ের
তালে তালে
রাখালের বাঁশির সুরে কিশোরী র
নূপুর বেজে উঠে রিনিঝিনি তানে।
ফিরিয়ে দাও নীল আকাশ
যেথা মেঘের ভেলায় চড়ে বৃষ্টি নামে
চাদঁ তারা খেলা করে জোছনার রেনু
মাখিয়ে।
অভিমানী প্রকৃতি শান্ত হও
তোমার হাতের পরশে আবার নব
উদ্যেমে জেগে উঠুক এ ধরিত্রী
দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে তোমার বুকে
গড়ে উঠুক এক সাজানো জনপদ
সে যে সোনালী সবুজে ঘেরা দেশ
বাংলা দেশ তার নাম।
স্নেহের আচঁল
————-
একটি সাদা মাটা শাড়ি র আঁচল,
যে আঁচল টি ছিল মায়া মমতায় মাখা
সাত রংয়ে আকাঁ।
আঁচলের প্রতিটা ভাজে ভাজে ছিল
এমন সুগন্ধি মাখা,
যার সুবাসে আত্ম হারা হত
প্রজাপতির দল।
প্রতিটা সূতোর বুননে গাথাঁ ছিল
সিগ্নতায় ভরা পরম স্নেহের আদর।
আঁচল টি যখন হাওয়ায় ভেসে বেড়াতো-
প্রজাপতির দল ছুটে আসতো
আঁচল টির একটু ছোঁয়া পাবার আশায়।
আহা, কি গভীরতা ভালোবাসায় ভরা ছিল
সেই আঁচল টির প্রতি টান।
কিন্তু একসময়, আঁচল টি রংহীন বিবর্ন হয়ে গেল,
ধূসর মেঘের মত, ছেঁড়া পালতোলা নৌকা হয়ে –
ভেসে বেড়াতে লাগলো।
আর ভালোবাসা, স্নেহ মমতা
কংক্রিটের ইটের মত টুকরো টুকরো হয়ে
কঠিন পাথরে রুপ ধারণ করলো।
রক্তাক্ত হলো রংধনু আকাঁ সেই আঁচল টি।
একসময়, প্রজাপতি রা ভুলে যায়
তাদের ছায়া ঘেরা আশ্রয়ের কথা।
কত নিষ্ঠুর নির্মম, সময় পাল্টে যায়,
সেখানে প্রজাপতি নয়, এখন বাস করে
ঘুনে পোকা রা
কুরে কুরে খায়, ক্ষত তৈরী করে,
মরা মানুষের ভ্যাপসা গন্ধ এর মাঝে
বিলীন হয়ে যায় সুগন্ধি আঁচল।
সীমা রেখা হীন সময় ছুটে চলে
বল্গাহরিণের মতো,
আসে মৃতের সাথে বসবাসের স্বপ্ন
সে এক প্রখর শান্তির হীম শীতল
তৃপ্তি র নিরবতা।
তারপরও, আছে বুকফাটা বোবা আকুতি
বধির চিৎকার,
একটি সাতরং সোনালী আঁচলের প্রত্যাশায়
যেখানে আবার লুটোপুটি খেতে আসবে –
প্রজাপতির দল
স্নেহের আঁচলের ছায়ায় মুখ লুকাবে
ভালোবেসে পরম মমতায় অবাধ বিচরনে।
মায়ের ভালোবাসা র কোন দিবস নেই। সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা জানিয়ে আমার এই লেখাটি।
“”প্রিয় মা””
————–
সময় পাল্টে যায়।
পাল্টায় মানুষের মনন চিন্তা ধারা
ছুটে বেড়ায় নানা কর্মে,
নিজেকে নিয়ে স্বপ্নের জাল বোনা
পিছু ফেরা যায় কি?
আবেগ ভালোবাসা পিছু কি টানে?
নাকি, নিজের মাঝে ই নিজের জগৎ তৈরি করে
প্রিয় জন কে দেয় দুরে সরিয়ে।
সেই ছোট্ট হাত দুটি ছুঁয়ে ছিল এক স্নেহময়ী
দৌড়াতে শিখিয়েছে সুন্দর একটি দিক নির্দেশনা দিয়ে
শক্ত হাতে দাড় করিয়েছে এই কঠিন মাটির বুকে।
আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দিয়েছে দুচোখ ভরে
কল্পনার রাজপুত্র / রাজকন্যার সাথে
গল্পের ঘোড়া ছুটিয়েছে যে —
তাকে কি অস্বীকার করা যায়? যায়না
সে তো আমার জন্মদায়িনী, আমার প্রিয় মা।
আহা, কি মিষ্টি শব্দ
অন্তরের ভিতর থেকে বেড়িয়ে আসা
কষ্ট যন্ত্রনার মাঝে এক সুখানুভূতি
মা মা মা
যতই দুরে থাকুক, বাড়ুক দুরত্ব, তাতে কি
তুমিতো আমারি ভিতরে বেড়ে ওঠা
একটি শান্তির আবাস
চোখ বুজলেই সেখানে আমি কে দেখতে পাই।
শত ঝড় ঝঞ্জা ব্যাথা বেদনায়–
স্নেহময়ীর একটি হাত যখন কপোলে পরশ
বুলিয়ে দেয়
সমস্ত দেহের রক্ত কনিকা পুলকে নেচে ওঠে।
এই তো আমার মা
আমার অমিয় ধারা
যার চোখে আমার জগৎ দেখি
চন্দ্রালোক, সুর্যালোক, আলোকিত জোছনা
তার মাঝে ই আমার মায়ের মুখ
আমার অদেখা ইশ্বর, যাকে মায়ের মাঝে
খুজে পাই।
তাই সময়ের সাথে সব পাল্টে গেলেও
মা কে যেন কখনও ভুলে না যাই
তাকে চীর জীবন জড়িয়ে রাখি বুকের মাঝে
অন্তরের সুপ্ত কোনে শ্রদ্ধায় ভালোবাসায়।
কনক বিশ্বাস
সংগঠক, খেলাঘর
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |