সুজিত মন্ডল | ২৪ আগস্ট ২০২০
অবশেষে ইউরোপের সেরা ক্লাব হওয়ার লড়াইয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিল জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ। বুন্দেসলিগার সফলতম দলটি গতকাল উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে পিএসজিকে হতাশায় ডুবিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপা নিশ্চিত করেছে।
এছাড়াও তাদের সাফল্যের ডানায় যুক্ত হয়েছে নতুন পালক। চলতি মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে গতিময় ফুটবল দিয়ে কোনো ম্যাচ না হেরে, অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। সুতরাং বলাই যায়, ফুটবলপ্রেমীদের দাপুটে এক মৌসুম উপহার দিয়েছে জার্মান ক্লাবটি।
গতকাল রাতে পর্তুগালের লিসবনের মাঠে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয় ফ্রান্স ক্লাব পিএসজি এবং জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ। রোমাঞ্চকর এই ম্যাচে পিএসজিকে ১-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে শিরোপা তুলে নিয়েছে বায়ার্ন। দলের হয়ে জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেন বায়ার্নের কিংসলে কোমান।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই ম্যাচের শুরুটা ভালোই করেছিলো দুই দল। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে বাড়ছিলো উত্তেজনা। খেলার ১৬ তম মিনিটের সময় সুযোগ পায় পিএসজি। কিন্তু নেইমারের নেওয়া দুইটি শটই পা দিয়ে প্রতিহত করেন বায়ার্ন গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার।
ম্যাচের ২২ তম মিনিটের সময় নিশ্চিত গোলের সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া হয়ে যায় বায়ারর্নের। দলের অন্যতম সেরা ফুটবলার লেভানডফস্কি ডি-বক্সের ভেতরে সুযোগ পেয়ে গোল বরাবর শট নেন। কিন্তু তার শট কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করলেও গোলবারে লেগে সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায়।
ম্যাচের ২৪ তম মিনিটের সময় গোলবারের অনেক কাছ থেকে শট নেওয়ার সুযোগ পেয়েয়েছিলেন পিএসজির ডি মারিয়া। তবে আর্জেন্টাইনের নেওয়া শট হাওয়ায় ভেসে গোলবারের অনেক উপর দিয়ে সীমানা পার হয়। ৩০ তম মিনিটের সময় আবারও সম্ভাবনা তৈরি করেন লেভানডফস্কি। তার নেওয়া দুর্দান্ত হেড হাত দিয়ে প্রতিহত করেন কেইলর নাভাস।
বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগ মূহুর্তে দারুণ একটা সুযোগ পান পিএসজির গতিময় ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পে। ডি-বক্সের ভেতরে গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারকে ফাকা পেয়েও গোল করতে পারেননি। তার নেওয়া দূর্বল শট নয়্যারের পায়ে লেগে ব্যর্থ হয়।
আর তাই কোনো গোল ছাড়াই প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে দুই দল।
বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণে জোর দেয় বায়ার্ন। নিজেদের গতিময় ফুটবল দিয়ে পিএসজির ডিফেন্ডারদের উপর চাপের সৃষ্টি করে তারা। সেই সুবাদে ম্যাচের ৫৯ তম মিনিটের সময় একমাত্র সাফল্যের দেখা পায় বায়ার্ন । দলীয় সমন্বের মাধ্যমে ডি-বক্সের ভেতরে আক্রমণ সাজায় তারা। কিমিচের বাড়ানো উঁচু বল থেকে দারুণ হেডে বল জালে জড়ান কিংসলে কোমান। এই গোলের কিছুক্ষণ পরেই গোল বরাবর শট নেন কোমান কিন্তু পিএসজির অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন।
ম্যাচের বাকি সময়ে অনেক চেষ্টা করেও ভালো কোনো আক্রমণ সৃষ্টি করতে পারেনি পিএসজি। প্রতিবারই তাদেরকে প্রতিহত করেছে ম্যানুয়েল নয়্যার এবং বায়ার্নের ডিফেন্ডাররা।
ম্যাচের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে পিএসজির বদলি হিসেবে নামা চুপো-মোটিং দলকে এগিয়ে নেওয়ার মোক্ষম সুযোগ পান। কিন্তু গোলবারের খুব কাছাকাছি পাওয়া বলে শট নিতে ব্যর্থ হন তিনি। আর সেই সাথে ২০১৯-২০ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা অধরাই রয়ে যায় পিএসজির।
ম্যাচের শেষ বাঁশি বেজে ওঠার পর শিরোপা আনন্দে ভাসে বায়ার্ন মিউনিখ এর খেলোয়াড়েরা। অন্যদিকে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ওঠা পিএসজির খেলোয়াড়েরা চরম হতাশা নিয়ে মাঠ ত্যাগ করে।
এই জয়ে চলতি মৌসুমে একটি ম্যাচেও পরাজিত না হওয়া বায়ার্ন মিউনিখ টুর্নামেন্টের ইতিহাসে ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতে ওঠে। চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপার পাশাপাশি তারা এই মৌসুমে জয় করেছে বুন্দেসলিগা এবং জার্মান কাপ শিরোপা।
আর চ্যাম্পিয়নস লিগে তৃতীয় সর্বোচ্চ শিরোপা এখন তাদের দখলে। ১৩ টি শিরোপা নিয়ে শীর্ষ স্থানে রয়েছে স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ এবং ৭ টি শিরোপা নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে এসি মিলান।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |