সুজিত মন্ডল | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এর ১ম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ২ রানে পরাজিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ ছয় মাস পরে ক্রিকেট মাঠে ফেরে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু শুরুতেই ইংল্যান্ডের কাছে হোঁচট খেয়ে বসলো তারা।
গতকাল রাতে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া প্রথম টি-টোয়েন্টি তে একে অপরের মুখোমুখি হয়। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টসে জিতে ইংল্যান্ড দলকে ব্যাটিং এর আমন্ত্রণ জানায়। ব্যাটসম্যানদের জন্যে উপকূলে থাকা উইকেটকে কাজে লাগিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলায় ইংল্যান্ড ১৬২ রান করতে সমর্থ হয়। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন ডেভিড মালান। ইংল্যান্ডের দেওয়া রানের জবাবে খেলতে নেমে দুরন্ত সূচনা করলেও ২০ ওভার শেষে ১৬০ রানে থেমে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
২০ তম ওভারের সময় জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়া দলের ১৫ রানের দরকার ছিলো। এই ওভারে বল করতে আসেন টম কারান। ১ম বল ব্যাটে স্পর্শ করতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান মার্কাস স্টয়নিস। তবে দ্বিতীয় বলে বড় ছক্কা হাঁকান তিনি। এরপর ৩য় বলেও রান করতে ব্যর্থ হন স্টয়নিস। ওভারের বাকি তিন বলে আর কোনো বাউন্ডারি আসেনি। বাকি প্রতিটি বল থেকে আসে ২ রান। অবশেষে ওই ২ রানেই ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করে।
এর আগে খেলার শুরুটা ভালোই করেছিলো ইংল্যান্ড দলের ব্যাটসম্যানরা। জস বাটলারের দুর্দান্ত ব্যাটিং এ প্রথম চার ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ইংল্যান্ড সংগ্রহ করে ৪৩ রান।
দলীয় ৪৩ রানের সময় বাটলারের সাথে সঙ্গ দিতে থাকা উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টোকে সাজঘরে ফেরান অস্ট্রেলিয়ান বোলার প্যাট কামিন্স। বেয়ারস্টো আউট হওয়ার পরেও কিছুক্ষণ টিকে ছিলেন বাটলার। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪৪ রানের সময় অ্যাগারের বলে কামিন্সের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হয়ে যান বাটলার।
উদ্বোধনী জুটি আউট হয়ে যাওয়ার পর কিছুটা বিপাকে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। সেই সুযোগ কাজে লাগায় অস্ট্রেলিয়া দলের বোলাররা। মাত্র ৮ রান করে অ্যাগারের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন টম ব্যান্টন।
এরপর জুটি গড়েন ডেভিড মালান এবং অধিনায়ক ওয়েন মরগান। কিন্তু নিজের বোলিং স্পেলের ১ম ওভারেই মরগানের উইকেট তুলে নেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। নিজের ২য় ওভারে আবারও মইন আলিকে সাজঘরে ফেরান তিনি।
ইংল্যান্ডের দলীয় ১১৪ রানের সময় কেন রিচার্ডসনের বলে আউট হন টম কারান। এমন মুহুর্তে মনে হচ্ছিলো, হয়তো খুব বেশি ইংল্যান্ডের ইনিংস। তবে ডেভিড মালান এই কথা মানতে নারাজ, একাই রানের চাকা সচল রাখছিলেন তিনি।
ম্যাচের ১৮ তম ওভারের সময় বল করতে আসেন অস্ট্রেলিয়ান স্পিন বোলার অ্যাডাম জাম্পা। জাম্পার ওভারে দুই ছক্কার পাশাপাশি ২২ রান তুলে নেন ডেভিড মালান।
অবশেষে ১৯ তম ওভারের প্রথম বলে ব্যক্তিগত ৬৬ রান করে কেন রিচার্ডসনের বলে আউট হন ডেভিড মালান। বাউন্ডারি থেকে স্টিভেন স্মিথ মালানের ক্যাচটি দারুণভাবে তালুবন্দি করেন।
ইইংল্যান্ডের দেওয়া ১৬২ রানের জবাবে খেলতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে দুই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চ। প্রথম ছয় ওভারে এই দুই ব্যাটসম্যান দলকে উপহার দেন ৫৫ রান।
দলীয় ৯৮ রানের সময় ৩২ বল থেকে ৪৬ রান করে জফ্রা আর্চারের বলে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। সেই সাথে ভেঙে যায় অস্ট্রেলিয়ার ওপেনিং জুটি।
এরপর ব্যাটে নামেন স্টিভেন স্মিথ। ১ম দুই বলে দুটি বাউন্ডারির মাধ্যমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন স্মিথ। কিন্তু তার ইনিংসটি দীর্ঘায়িত হয় নি। ব্যক্তিগত ১৮ রান করে আদিল রশিদের বলে আউট হন তিনি। একই ওভারে আদিল রশিদ তুলে নেন বিপদজনক ব্যাটসম্যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট।
এখান থেকেই ম্যাচে অনেকটা পিছিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। যদিও ওয়ার্নার তখনও ম্যাচের হাল ধরে ছিলেন। কিন্তু দলের বিপর্যয়ের মুহূর্তে তিনিও আউট হয়ে যান। জফ্রা আর্চারের বলে বোল্ড আউট হওয়ার মাধ্যমে তার ৪৭ বলে ৫৮ রানের ইনিংসটি শেষ হয়।
তারপর অ্যালেক্স কেরি ১ রান করে এবং অ্যাগার ৪ রান করে আউট হয়ে যান। ম্যাচের তখন একমাত্র ভরসা স্টয়নিস। কারণ বাকিরা বেশিরভাগ ক্রিকেটারই বোলার। অ্যাগার আউট হওয়ার পর তার সাথে জুটি গড়েন প্যাট কামিন্স।
কিন্তু স্নায়ুচাপের এই খেলায় নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরতে পারেননি স্টয়নিস। ইংল্যান্ড বোলারদের আত্মবিশ্বাসী বোলিংয়ে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েন তিনি। তাই ২০ তম ওভারে একটি ছক্কা ব্যতীত আর কোনো বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেননি তিনি।
তাই শেষ পর্যন্ত ২ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সফরকারীদের। সেই সাথে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো ইংল্যান্ড।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |