| ১১ আগস্ট ২০২০
লিভ লাইক এ বার্ডস
দিলু আলী
এক বিকেলে সুউচ্চ পাহাড়ের পাদদেশে শুয়ে আছি ঘাসেদের সাথে:
ঐ দূরে একটি পাখি উড়ে যাচ্ছে;
তাঁর পায়ে বাদামী খড়; –
নতুন নীড় বানাবে বলে পাখিটি উড়ে যাচ্ছে;
শরতের বিস্তীর্ণ নীল আকাশে ভেসে যাচ্ছে তুলোর মতো সাদা মেঘ –
যেমন নীল সমূদ্রে ভেসে যায় সাদা-সাদা শীতল বরফ;
সুউচ্চ পাহাড়ের পাদদেশ জুড়ে কাশ-জঙ্গল ও ফুল মৃদু হাওয়ায়
উড়ছে উড়ছে,
উড়ে যাচ্ছে
আর তাঁর সোঁদা গন্ধ মিশে যাচ্ছে আমার শরীরে, রক্তে;
এইসবের ভেতর দিয়ে পাখিটি তাঁর দু’ পায়ে লটকে নিয়ে যাচ্ছে বাদামী খড়
ঐ দূরে ঘন সবুজ ঝাউ বনের দিকে;
সমস্ত বিকেল সুউচ্চ পাহাড়ের পাদদেশে ঘাসেদের সাথে শুয়ে শুয়ে
কাটিয়ে দিলাম;
রক্তজবার সকল লাল চুষে এনে সূর্য যখন চুপি চুপি
ঐ দূর-দিগন্তের কপালে পরিয়ে দিলো মস্ত গোল টিপ –
তখন আবছা আধাঁরে আমারে সঙ্গ দিলো ঝাঁকে ঝাঁকে জোনাকির দল;
তারপর চঞ্চল জোনাকিদের বিদায় দিলো রুপবতী নরোম জোৎস্না;
অনেক অনেক দিন পর জোৎস্নার সাথে দেখা –
কতো যে গল্প জমে আছে, আহা !
কিন্তু হায়,
আজকাল ভীষণ বিরহ আমার
গভীর দুঃখের পাথর নিঃশব্দে গহীন অতলে তলিয়ে দিচ্ছে আমাকে;
তাই গল্প নয়,
উচ্ছ্বাস নয়,
সহস্র বছরের নিস্তব্দতা বিস্তার করছে ভেতরে আমার;
তারচেয়ে বরং ফিরে যাই
বিদায়, যাই
ফিরে যেতে চাই –
কিন্তু কই যাই?
ফেরার কোনো পথ নেই –
যেমন চিরকালই থাকে না!
তবুও বেরিয়ে পড়ি অন্য অচিন পথে;
জানি, ঝাউ বনের আড়ালে একা চাঁদ আমাকে নিয়ে করছে বিদ্রুপ –
আর তাঁর প্ররোচনায়
জোৎস্না কী আমাকে ছাড়ছে না একলা পথে?
ওহ, ব্যকুল স্বরে কে ডাকছে আমাকে?
আহা সেই পাখি, ঝাউ গাছের ডালে বাদামী খড় এখনো এলোমেলো;
পথহারা ক্লান্ত পথিক, কিসের এতো দুঃখ তোমার?
কী বলবো আমি?
যদি খুলে দেই বুকের দুয়ার জ্বলে-পুড়ে ছাই ভষ্ম হবে
সুউচ্চ পাহাড়,
ঘাসদল,
শরতের বিস্তীর্ণ নীল আকাশ,
কাশ-জঙ্গল ও ফুল,
মৃদু হাওয়া,
ঘন সবুজ ঝাউ বন,
দূর-দিগন্ত;
যদি খুলে দেই বুকের দুয়ার জ্বলে-পুড়ে ছাই ভষ্ম হবে
জোনাকির দল,
একা চাঁদ
রুপবতী নরোম জোৎস্না, –
আর ও পাখি তুমি,
তোমার ঝাউয়ের ডাল,
বাদামী খড় –
যে নীড় নির্মাণ হয়নি এখনো –
সেই নীড়!
আমি তবে কিছুই বলবো না
হ্যাঁ, আমি তবে কিছুই বলবো না
খুলবো না বারুদ ভরা বুকের দুয়ার!
একি!
হু হু করে হেসে উঠলো একা চাঁদ!
ঐ একা চাঁদ কী তবে জেনে গেছে সবকিছু?
ঐ একা চাঁদ কী তবে বলে দেবে সকলকে সবকিছু?
যদি কবি হতাম –
সেই রাত্রির কথা স্ববিস্তারে বলে যেতে পারতাম তোমাকে;
কবি নই,
জানি না কবির মতো এতো কথা, এতো ভাষা!
তারপর?
তারপর পৃথিবীর অমোঘ যন্ত্রনা-জ্বালা
তারপর বিদায়ের পালা;
কথা দিয়েছি বিদায় বেলায় –
প্রেমিক হবো;
কথা দিয়েছি –
হে পাহাড়,
ক্ষুদ্র নয় – তুচ্ছ নয়, – তীব্র তান্ডবে নিজের সাথেই হবে লড়াই!
হে ঘাসদল,
তোমার ‘পরে মুখ লুকিয়ে কাঁদবো না আর!
হে আকাশ,
নিখাদ বিশ্বাসে তোমার বিশালতাকে ধারণ করবো হৃদয়ে!
হে কাশ-জঙ্গল ও ফুল,
সুন্দর হয়ে উঠবো, হবো সুভাসিত!
হে ঝাউ বন,
আসুক দারুণ তপ্ত-খরা, আসুক
হবো লোভহীন, হবো উদার!
হে দূর-দিগন্ত,
পথে নেমেছি, – পথ হারাবো, – পাবো
তবু আশা হারাবো না!
হে পাখি, স্বাধের ঘর পর করেছে বলে,
আজন্ম তুমিহীন বলে আর কোনোদিন কষ্ট পাবো না, – কথা দিলাম!
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |